সংবাদ শিরোনাম :
কেরানীগঞ্জে ৩লক্ষ জাল টাকা এবং জাল টাকা তৈরির সরঞ্জামাদিসহ গ্রেফতার ২

কেরানীগঞ্জে ৩লক্ষ জাল টাকা এবং জাল টাকা তৈরির সরঞ্জামাদিসহ গ্রেফতার ২

মশিউর রহমান স্টাফরির্পোটার :
ঢাকার কেরানীগঞ্জে তিন লক্ষ জাল টাকা এবং জাল টাকা তৈরীর সরঞ্জামাদিসহ দুইজনকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব-১০। গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে মোঃ গিয়াস উদ্দিন(২৭) ও মোঃ রেদোয়ান শেখ ওরফে মুমিন (১৯)। আজ শুক্রবার সকালে র‌্যাব-১০ এর মিডিয়া সেল জানায়, সাম্প্রতিক সময়ে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাব জানতে পারে,একটি প্রতারক চক্র দীর্ঘদিন যাবত জাল নোট তৈরি করে রাজধানী ঢাকার কেরাণীগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, যাত্রাবাড়ী, কদমতলী, শ্যামপুর, ডেমরা এবং নারায়ণগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করে আসছে। এই চক্রটি জাল নোটের ব্যবসা করে সাধারণ মানুষকে প্রতারিত করে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র‌্যাব-১০, লালবাগ ক্যাম্পের একটি আভিযানিক দল তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার শুভাঢ্যা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে উক্ত ২ জন জাল টাকা প্রস্তুতকারীকে গ্রেফতার করে। এ সময় তাদের নিকট হতে ১০০ টাকার জাল নোট দুই লক্ষ আশি হাজার টাকা ও ৫০ টাকার জাল নোট তিন লক্ষ দশ হাজার টাকা, ১টি ল্যাপটপ, ১টি প্রিন্টার, ১টি কি-বোর্ড, ১টি মাউস, ৪টি ক্যাবল, ১টি রাউটার, ১টি হেয়ার ড্রায়ার, ১টি পাম্প এন্ড স্প্রে, ১টি ফয়েল রোল, ৮ বোতল বিভিন্ন রং এর কালি, ১টি ষ্টীলের স্কেল, ২টি কার্টার, ৩টি কার্টিং ফ্রেম, ১০০ পাতা কাগজ, নগদ দুই হাজার টাকা, পাকিস্থানী ৫০ রুপি ও ৩টি মোবাইল ফোন উদ্ধার এবং ১টি মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে,গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিরা একটি সংঘবদ্ধ জাল টাকা প্রস্তুত ও সরবরাহকারী চক্র। তারা ইউটিউব ও গুগলসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সাহায্যে জাল টাকা তৈরির সার্বিক দক্ষতা অর্জন করে। অতঃপর তারা উচ্চভিলাষী অভিপ্রায় ও কম সময়ে অল্প পুঁজিতে অধিক অর্থ উপার্জনের উদ্দেশ্যে জাল টাকা প্রস্তুত করার পরিকল্পনা করে। পরবর্তীতে তারা জাল টাকা তৈরির প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি ক্রয় করে এবং জাল টাকা সরবরাহের জন্য জাল টাকা তৈরি ও সরবরাহকারী বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পেইজ ও গ্রুপে সংযুক্ত হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানা যায়, চক্রটি বিভিন্ন সময়ে রাজধানী ঢাকার কেরাণীগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, যাত্রাবাড়ী, কদমতলী, শ্যামপুর, ডেমরা এবং নারায়ণগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় তৈরিকৃত জাল নোট সরবরাহ করত। তারা প্রতি ১ লক্ষ টাকা মূল্যের জাল নোট ১৫-২০ হাজার টাকার বিনিময়ে বিক্রি করত। বিশেষ করে মাছ বাজার, লঞ্চ ঘাট, বাস টার্মিনালসহ বিভিন্ন মার্কেটে নানান কৌশল অবলম্বন করে জাল নোট সরবরাহ করে করতো। এছাড়াও তারা অধিক জন-সমাগম অনুষ্ঠান বিশেষ করে বিভিন্ন মেলা, উৎসব, পূজা ও কোরবানীর পশুর হাট উপলক্ষে বিপুল পরিমান জাল নোট ছাপিয়ে ছিল বলে তথ্য প্রদান করে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিতে জালনোট প্রিন্টিং এর সময় কাগজের অব্যবহৃত ও নষ্ট অংশগুলো পুড়িয় ফেলত। এ পর্যন্ত তারা বিভিন্ন সময়ে প্রায় ১-২ কোটি টাকা মূল্যমানের জাল নোটের ব্যবসা করেছে বলে জানায়।গ্রেফতারকৃত গিয়াস উদ্দিনের বাবার নাম মৃত মোজাম শেখ। বাড়ি পিরোজপুর জেলার পূর্ব ডুমরিতলা গ্রামের এবং রেদোয়ান শেখের বাবার নাম মৃত কাঞ্চন আলী শেখ। বাড়ি পিরোজপুর জেলার নরও খালি গ্রামে। তারা দুজনেই দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার চুনকোটিয়া মুসলিম নগর এলাকায় থাকতেন।

Facebook Comments Box





© স্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৪ দৈনিক নাগরিক বাণী